বিদেশ ডেস্ক ॥ কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের চার বছর পর প্রথমবারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মেরামতের লক্ষ্যে সরাসরি আলোচনা করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের চিরবৈরী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব এবং ইরানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। ওই আলোচনায় অংশ নেওয়া দুই দেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রোববার ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। গত ৯ এপ্রিল ইরাকের রাজধানী বাগদাদে সৌদি এবং ইরানি কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রথম দফার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, বৈঠকে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে সৌদি আরবের সংঘাতের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বাগদাদে ওই আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে ইরানের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেছেন সৌদি আরবের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ইরানপন্থী লেবাননের আল মায়াদিন টেলিভিশন এবং সংবাদ সংস্থা ইউনিউজ রোববার ইরানি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, তেহরানও সৌদি আরবের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার দাবি অস্বীকার করেছে। এই বৈঠকের বিষয়ে জানতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পায়নি। এছাড়া মন্তব্যের জন্য ইরানি কর্মকর্তাদেরও তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। ইরান এবং সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন এক সময়ে এই গোপন বৈঠকের তথ্য প্রকাশ্যে এলো, যখন ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন এবং তেহরান। সৌদি আরব বরাবরের মতো পারমাণবিক এই চুক্তির বিরোধিতা করছে। ইয়েমেনে ছয় বছরের বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাত বন্ধে সৌদির প্রতি চাপপ্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইয়েমেনের এই যুদ্ধকে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব এবং ইরানের ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন করে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে সমর্থন জানায় সৌদি আরব এবং এর মিত্ররা। গত সপ্তাহে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, আত্মবিশ্বাস নির্মাণের পদক্ষেপে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অংশগ্রহণ আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে পারে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, ইরান-সৌদি আরবের মধ্যে সরাসরি আলোচনার উদ্যোগ বাস্তবায়নে গত মাসে রিয়াদ সফর করেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাধিমি। মিসর এবং জর্ডানের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক মেরামতে বাগদাদ যোগাযোগের একটি চ্যানেল তৈরি করে।
Leave a Reply